COVID-19 ভ্যাকসিন
২০২০ সাল থেকে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের তথা পুরো বিশ্বের মানুষের কাছে এক আতঙ্ক করোনাভাইরাস। Covid-19 -এর ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে পুরো পৃথিবী শুধুমাত্র একটি জিনিসের জন্যই অপেক্ষা করছিল সেটা হল Covid19-এর ভ্যাকসিন।
আজ ভারতে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন available এবং তার implementation ও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে আমাদের মনে এখনও নানান প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে – কোন ভ্যাকসিন নেব, কোনটি ভাল, কতদিন অন্তর থেকে side-effect হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।তো আপনাদের এই সব প্রশ্নগুলির উত্তর আপনারা এখানে পেয়ে যাবেন।
• প্রথমেই বলি ভ্যাকসিন আসলে কী এবং তা আমাদের শরীরে কিভাবে কাজ করে?
ভ্যাকসিন একটি substance যেটা আপনার দেহে প্রবেশ করে আপনার immune system কে মজবুত করে। আমাদের দেহের একটি সাধারন immunity power আছে যা আমাদের প্রতিনিয়ত নানান ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে রক্ষা করছে। কিন্তু কিছু কিছু ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ক্ষেত্রে আমাদের এই সাধারন immune system পর্যাপ্ত কাজ করতে পারে না। তখনই প্রয়োজন হয় ভ্যাকসিনেশনের। নির্দিষ্ট disease এর জন্য ভ্যাকসিন নিলে সেই ভ্যাকসিন আমাদের দেহে অ্যান্টিবডি বা memory cell তৈরি করে, যার ফলে আমাদের শরীর ঐ ভাইরাস কে চিনতে পারে এবং তাকে কমজোর করে দেয় বা মেরে ফেলে যাতে সেটি আমাদের কোনো ক্ষতি না করতে পারে।
• ভারতে কবে, কয়টি phase-এ ও কিভাবে vaccination শুরু হয়েছে?
ভারতের 16 ই জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন phase এ vaccine drive শুরু হয়েছে। প্রথম phase এ যেখানে শুধুমাত্র Healthcare এবং Frontline worker দের vaccinated করা হয়েছিল, সেখানে পরবর্তী phase গুলি তে বয়সের ভিত্তিতে ভ্যাক্সিনেশন করা হয় এবং 4th phase এ ১৮ বছরের উর্ধ্বে সমস্ত দেশবাসীকে টিকা দেওয়ার পর্যায় শুরু হয়েছে। শিশুদের অথবা ১৮ বছরের নিচে যারা রয়েছে তাদের ভ্যাক্সিনেশন এখনো শুরু হয়নি।
• ভারতে কি কি ভ্যাকসিন available আছে ?
ভ্যাকসিনেশনের শুরু থেকে আমাদের দেশে দুটি ভ্যাকসিন available আছে ।
- COVAXIN – এটি সম্পূর্ণভাবে ভারতের তৈরি। ভারত বায়োটেক এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে। এটি একটি inactivated vaccine অর্থ্যাৎ ল্যাবে করোনা ভাইরাস বা SARS-CoV-2 ভাইরাস তৈরি করে chemical treatment এর মাধ্যমে inactivate করে আপনার শরীরে ইনজেক্ট করা হবে, যাতে সেটি আপনার কোনো ক্ষতি না করে, কিন্তু ভ্যাকসিনটি আপনার শরীরকে এই ভাইরাসটি সম্পর্কে অবগত করবে এবং তার ফলে এর বিরুদ্ধে আপনার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।
- COVISHIELD – এর formulation হয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও Astrazeneca র মিলিত প্রয়াসে এবং ভারতে তা প্রস্তুত করছে Serum Institute of India . এটি একটি viral vector vaccine যেক্ষেত্রে শিম্পাঞ্জির শরীরে প্রাপ্ত adenovirus নিয়ে তার জেনেটিক কোড চেঞ্জ করে SARS-CoV-2 ভাইরাসের জেনেটিক কোড input করা হয় এবং এটি যখন আমাদের শরীরে ইনজেক্ট করা হয়। তখন তা এই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
বর্তমানে একটি নতুন ভ্যাকসিন ভারতে এসেছে যার নাম Sputnik v। ভ্যাকসিনটি রাশিয়ার Gamaleya National center এ প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ভারতে আপাতত এটি প্রস্তুত করবে Dr. Reddy’s Lab। এই ভ্যাকসিন এর কিছু dose already রাশিয়া থেকে ইমপোর্ট করা হয়েছে এবং আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন দেশবাসীর কাছে পৌঁছে যাবে। বলা হচ্ছে এই ভ্যাকসিন টির অন্য দুটি ভ্যাকসিন এর থেকে আরও বেশি protective কারণ এই vaccine টি covidshield এর মতো viral vector হলেও এক্ষেত্রে দু’ধরনের ভেক্টর use করা হয় যার ফলে এর efficacy rate অনেক বেড়ে যায় এবং করোনাভাইরাস এর বিরুদ্ধে তা বেশি ভালোভাবে immumity তৈরি করতে পারে। অন্য দুটি ভ্যাকসিন ও যথেষ্ট প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন ভাবে কাজ করলেও এই দুটি ভ্যাকসিনের efficacy rate 70-80% সেখানে Sputnik v এর efficacy rate প্রায় 92%।
[ আরও জানুন – বিশ্বের সবথেকে বড় পাখির মূর্তি ]
• আপনি কোন ভ্যাকসিন নেবেন?
কোন ভ্যাকসিনই আপনাকে 100% সুরক্ষা দিতে পারবে না, তবে অবশ্যই করোনাভাইরাস যদি আপনার শরীরে ঢোকে আর আপনি যদি vaccinated থাকেন তাহলে তা কোন ভয়াবহ সমস্যা তৈরি করতে পারবে না। তাই কোন ভ্যাকসিন নেব, বা পরে নেব এসব না ভেবে, আপনার এলাকায় যে ভ্যাকসিন available আছে সেটি নিয়ে নিন, সেটি আপনার রক্ষাকবজ হবে।
• ভ্যাকসিন- এর ২য় ডোজ কখন নেওয়া উচিত ?
প্রত্যেকটি ভ্যাকসিনের দুটি dose ই complete করতে হবে। COVAXIN এর ক্ষেত্রে দুটি dose এর মধ্যে ব্যবধান হওয়া উচিত চার থেকে ছয় সপ্তাহ। অন্যদিকে COVISHIELD এর ক্ষেত্রে তা অন্তত ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ হতে হবে। আর Sputnik v এর ক্ষেত্রে এই ব্যবধান হতে হবে ২১ দিনের। কোন ভ্যাকসিন এরই একটি dose এ কিন্তু কাজ হবে না আর side-effects নিয়ে চিন্তা করবেন না, যে কোন ভ্যাকসিন এর কিছু না কিছু side-effect থাকে যেমন জ্বর, গায়ে ব্যথা, weakness, headache, তবে এগুলো ছাড়া যদি কোন severe সমস্যা হয় তবে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের সাথে consult করবেন। এছাড়াও যদি কোন Drug allergy, food allergy বা রক্ত জনিত সমস্যা থাকে তাহলে আপনার doctor এর সাথে consult করে তবেই ভ্যাকসিন নেবেন। যদিও সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, তাও বলে রাখি upper arm ছাড়াও অন্য কোথাও এই ভ্যাকসিন নেবেন না।
আশাকরি ভ্যাকসিনসংক্রান্ত আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। এছাড়াও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে বলতে পারেন । ভ্যাক্সিনেশন ছাড়া এই মহামারী কে আটকানোর আর অন্য কোন পথ নেই তাই এই তথ্যগুলি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেলেও সবধরনের সাবধানতা অবলম্বন করবেন। Mask পরবেন, স্যানিটাইজার use করবেন দূরত্ব বজায় রাখবেন। কারণ আপনি ভ্যাকসিন নিলেই করোনা পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে না বা ভ্যাকসিন আপনার শরীরে জাদুর মত কাজ করবে না। তাই আপনার সাবধানতা আপনার হাতে।
দৈনন্দিন আপডেটের জন্য আমাদের FACEBOOK ও INSTAGRAM page ফলো করুন, সমস্ত লিংক পেয়ে যাবেন ডেসক্রিপশন বক্সে।
সবাই সুস্থ থাকুন, এই পৃথিবী আবার সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা করি ধন্যবাদ।
ভালো লাগলে পোস্টটি সকলের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন । আপনাদের মতামত নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানান আমরা অপেক্ষায় আছি ।
নিচের ভিডিওটি দেখুন