পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং সর্ববৃহৎ পাখির মূর্তিটি তৈরি হয়েছে আমাদের দেশ ভারতবর্ষে ।
5 years ago bongcuriosity@gmail.comপৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং সর্ববৃহৎ পাখির মূর্তি
তবে এই মূর্তির সম্বন্ধে জানানোর আগে এর পেছনের ইতিহাস আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই । আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে প্রাচীন ভারতের প্রধান দুটি সংস্কৃত মহাকাব্যের নাম হল ‘মহাভারত’ ও ‘রামায়ণ’ । এই রামায়ণ এর ইতিহাস অনুযায়ী যখন লঙ্কার রাজা রাবন সিতা কে হরন করে নিয়ে যাচ্ছিল তখন জটায়ু নামক পাখিটি সিতা কে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসে এবং রাবনের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে তার একটি ডানা কেটে মাটিতে পড়ে যায়। কিন্তু সে ভগবান রামের আসা পর্যন্ত জীবিত থাকে এবং জটায়ু ই তাকে বলে যে রাবন সিতা কে দক্ষিণ দিকে নিয়ে গেছে ।
তো সেই দক্ষিণেই কোল্লাম কেরালার চান্দমঙ্গল গ্রামে ১০০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের ওপর তৈরি হয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পাখির মূর্তি , যেটি JATAYU NATURE PARK -এর মধ্যে অবস্থিত যা JATAYU EARTH CENTRE নামে পরিচিত।
-
মূর্তিটির গঠন
পৌরাণিক ইতিহাস অনুযায়ী জটায়ুর মূর্তিটিতেও একটি ডানা নেই। এই অদ্ভুত সুন্দর মূর্তিটি ১৫০ ফুট চওড়া , ২০০ ফুট লম্বা এবং ৭০ ফুট উঁচু । আর এই মূর্তিটি ৩০০০০ বর্গফুট অঞ্ছল জুড়ে বিস্তৃত।
এই বিখ্যাত মূর্তিটির নকশা তৈরি করেচেন বিখ্যাত সিনেমা পরিচালক এবং ভাস্কর RAJIV ANCHAL। এখণ হয়তো আপনারা ভাবচেন যে কেন এই মূর্তিটি এই নেচার পার্কের এতো উঁচু পাহাড়ের ওপর বানানো হয়েছে। তো আপনাদের জানিয়ে রাখি এই মূর্তির ডিজাইনার রাজিব আঁচাল স্থানীয় লোকেদের থেকে শুনেছিলেন যে সিতা কে বাঁচাতে গিয়ে এই পাহাড়ের ওপরেই জটায়ুর মৃত্যু ঘটে তাই এই মূর্তিটি বানানোর জন্য তিনি এই স্থান টি নির্বাচন করেন ।
পৌরাণিক ইতিহাস অনুযায়ী জটায়ুই সেই চরিত্র যে প্রথম women safety-র জন্য নিজের প্রাণ হারিয়েছিল তাই এই জায়গার staff এবং সিকিউরিটির জন্য মহিলাদের কেই বেছে নেওয়া হয় ।
-
মূর্তিটি কিভাবে তৈরি করা হলো
এই দারুন মূর্তিটি তৈরি করার story ও কম amazing নয় । প্রায় ১০০০ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পাখির মূর্তিটি বানানোর জন্য নীচ থেকে material নিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল, কিন্তু পরে সমস্যার সমাধান হিসেবে material winch rope ব্যবহার করা হয় যাতে একেবারে 800 কিলো material নিয়ে আসা যেত । এছাড়া এই মূর্তির কাজ আগে বাড়ানোর জন্য equipment এরও দরকার কিন্তু এই মূর্তি ডিজাইনার চেয়েছিলেন কম খরচে একটি সুন্দর মূর্তি তৈরি করতে তাই তিনি এখানকার গ্রামের প্রায় ১০০০ জন লোককে construction-এর basic idea দিয়ে এই মূর্তি তৈরীর কাজে নিয়োগ করেন ।
এই মূর্তি পুরোপুরি তৈরি করতে খরচ লেগেছে মাত্র ১০০ কোটি এবং এর সমস্ত খরচই প্রাইভেট ফান্ড থেকে নেওয়া হয়েছে। পুরো মূর্তিটি তৈরি হয়েছে roller compacted concrete দিয়ে, শুধুমাত্র পাখির নখ গুলি ছাড়া কারন পাখির নখগুলি stainless steel এর তৈরি । এই বিশালাকার পাখির মূর্তিটির ভেতর প্রায় ১৫০০০ বর্গফুট জায়গা রয়েছে যেখানে তৈরি হতে চলেছে অডিও-ভিজুয়াল ত্রেতাযুগ মিউজিয়াম এবং 32 seater multidimensional থিয়েটার যেখানে আপনাদের জটায়ুর গল্প দেখানো হবে এছাড়াও ভেতর থেকে একটি চোখ দিয়ে এখানকার সানরাইজ এবং আরেকটি চোখ দিয়ে -এর সৌন্দর্য দেখতে পাবেন তাহলে বুঝতেই পারছেন , কতটা সুন্দর বানানো হচ্ছে এই মূর্তিটি । এই মূর্তিটি তৈরি করতে সময় লেগেছে পুরো ১০ বছর , আর এই মূর্তির ভেতরের construction complete হবে ২০২০ সালে ।
এই জটায়ু মূর্তিটি দেখার জন্য জটায়ু নেচার পার্কে প্রবেশ করার ব্যবস্থা রয়েছে একটি world class cable car ride-এর সাহায্যে এবং তার সাথে রয়েছে Heli ride যার সাহায্যে আপনারা জটায়ুর মূর্তির বাইরের সৌন্দর্যের এই জায়গার সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। এই পার্কের ব্যাপারে আর একটি কথা শুনলে তো আপনারা অবাক হয়ে যাবেন এই মূর্তি তৈরি হওয়ার আগে এই পাহাড়ের চারপাশে গাছপালা জঙ্গলের কোনো অস্তিত্বই ছিল না, পরবর্তীকালে environment-এর কথা ভেবে পাহাড়ের চারপাশে গাছ লাগিয়ে নেচার পার্ক তৈরি করা হয়। এছাড়াও এই পার্কের ভেতরে একটি মন্দির ও আছে যেখানে ভগবান রামের পায়ের ছাপ রয়েছে। তো পৌরাণিক ইতিহাসের অনুসরণে women safety কে dedicate করে তৈরি করা হয়েছে WORLD’S LARGEST BIRD SCULPTURE।
⇒ কীভাবে যাবেন?
জটায়ু নেচার পার্কে পৌঁছানো খুব কঠিন নয়। নিকটতম রেলস্টেশন হল কোল্লাম। এই স্টেশন থেকে জটায়ু নেচার পার্কের দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার। এছাড়া এই পার্কের নিকটতম বিমানবন্দর হল থিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর যার দূরত্ব এই পার্ক থেকে ৫১ কিলোমিটার। রেলস্টেশন বা বিমানবন্দর-এর বাইরে এসে অটো বা গাড়ি ভাড়া করেই চলে যেতে পারবেন জটায়ু নেচার পার্ক।
ভালো লাগলে পোস্টটি সকলের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন | আপনাদের মতামত নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানান আমরা অপেক্ষায় আছি |
নিচের ভিডিওটি দেখুন