November 16, 2024

মায়াপুরেই এবার তৈরি হচ্ছে বিশ্বের সবথেকে বড় মন্দির

Mayapur Iskon Temple

  মায়াপুর ইসকন মন্দির- Mayapur Iskcon Temple

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নদিয়া জেলার মায়াপুরে নির্মীয়মান ইসকন মন্দির হতে চলেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মন্দির যার নাম TEMPLE OF VEDIC PLANETARIUM।

 

Vaidic Temple Iskon

  

• মন্দিরের গঠন

350 ফুট  উঁচু মন্দির  থাকবে বৈদিক সায়েন্স মিউজিয়াম,প্লানেটরিয়াম‌ এবং চার ধরনের রান্না ঘর ইত্যাদি। মায়াপুর কে বলা হয় কীর্তনের রাজধানী।  ইসকন মন্দিরের হলে প্রায় দশ হাজার ভক্ত একসাথে প্রার্থনা করতে পারবেন। মন্দিরের সম্মুখে থাকবে সবুজের মেলা, ফাউন্টেন ইত্যাদি। মন্দিরের মধ্যে দেখা যাবে হিন্দু দেব দেবীর মূর্তি এবং তার সাথে থাকবে নানান সূক্ষ্ম শিল্পকর্ম। যার দায়িত্বে রয়েছেন পৃথিবী বিখ্যাত নানা বড় বড় কোম্পানি। ইস্কনের ভক্তগনও মন্দির নির্মাণের নানান কাজে যুক্ত। এই অপূর্ব নিদর্শন দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও দু’বছর, ২০২২ সালে এই মন্দিরের উদ্বোধন হবে।

তবে এখনও, এই মায়াপুরের ইসকন মন্দির (Mayapur Iskcon Temple) বেশ বিখ্যাত, বছরে প্রায় ৬ মিলিয়ন ভক্তদের ভিড় দেখা যায় এখানে। বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত মন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে দুটি প্রধান মন্দির একটি চন্দ্রোদয় মন্দির আর একটি শ্রীল প্রভুপাদ পুষ্পসমাধি মন্দির

 

Iskon-Temple

   

• চন্দ্রোদয় মন্দির

চন্দ্রোদয় মন্দিরটি হল মূল পুজালয় যেখানে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের অপূর্ব সুন্দর মূর্তি যা থেকে চোখ ফেরানো দায় তার সাথে রয়েছে গৌর নিতাই এর মূর্তিও অসম্ভব শান্ত এই পুজালয়ে যখন ভক্তরা একসাথে কীর্তন গেয়ে ওঠে বিশ্বাস করুন গায়ে কাঁটা দেয় কোথা থেকে এক অদৃশ্য শক্তি যেন ভক্তি জাগিয়ে তোলে আপনার মনে। 

• শ্রীল প্রভুপাদ পুষ্পসমাধি মন্দির

শ্রীল প্রভুপাদ পুষ্পসমাধি মন্দিরএ রয়েছে বিশ্বব্যাপী ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদের সোনার মূর্তি, রয়েছে তার জীবনে প্রদর্শনকারী একটি মিউজিয়াম যেখানে প্রবেশ মূল্য মাত্র ১৪ টাকা, রয়েছে একটি পুকুরও।

এই মন্দিরে প্রবেশ করার আগে জুতো ও মোবাইল জমা রাখতে হয় এবং তার জন্য দিতে হয় ন্যূনতম মূল্য। পুরো মন্দির চত্বরে রয়েছে সবুজের শারি ফুলের বাগান, রয়েছে একটি অডিটোরিয়াম যেখানে অডিও ভিজুয়াল শো দেখানো হয় যেখানে টিকিটের মূল্য ৪০ টাকা।

প্রত্যেকদিন এখানে হাজার হাজার মানুষ দের ভোগের ব্যবস্থা করা হয় এবং প্রত্যেকদিন ৫০০ জনকে বিনা পয়সায় খাওয়ানো হয়।

 

Mayapur-Iskon-temple-Bhog

 

    বাকিদের জন্য ৩০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত নানান দামের ভোগের টিকিট রয়েছে, যাতে পাবেন ভাত, তরকার্‌ খিচুরী, পোলাও নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার। বিভিন্ন ভোগের জন্য রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভবন যেখানে দুপুর বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত খাওয়ানো হয়। তবে ভোগের টিকিট পেতে গেলে একটু সকাল-সকাল যেতে হবে, কারণ এগারোটার সময় টিকিট দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তবে চিন্তা করার কিছু নেই কারণ মন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যে পেয়ে যাবেন নিরামিষ খাবারের নানান রেস্টুরেন্ট।

এছাড়াও যে দোকানগুলি রয়েছে তার মধ্যে পাবেন আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নানান পোশাক, ব্যাগ, খাবার ইত্যাদি; রয়েছে প্রসাদ কেনার ব্যবস্থাও। এছাড়াও এখানে রয়েছে পর্যটকদের ভাড়া দেওয়ার জন্য হোটেল, এখানকার শান্ত-স্নিগ্ধ নিরিবিলি পরিবেশ আপনার মনকে এক অপ্রত্যাশিত শান্তি এনে দেবে। দেশে-বিদেশে মানুষকে যখন একইভাবে একই মঞ্চে কৃষ্ণ নাম করতে দেখবেন, আলপনা দিতে দেখবেন সত্যিই মন জুড়িয়ে যাবে। তাই একবার অবশ্যই এই মন্দিরটি ঘুরে আসবেন।

 

⇒ কিভাবে যাবেন?

    এখানে যেতে হলে হাওড়া বা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে হবে।

    হাওড়া থেকে নবদ্বীপ ধাম-এর ট্রেন ধরে নামতে হবে নবদ্বীপ ধাম অথবা বিষ্ণুপ্রিয়া স্টেশনে, সেখান থেকে টোটো তে করে যেতে হবে নবদ্বীপ ঘাট, ভাড়া মোটামুটি ১৫ টাকা মত তারপর নবদ্বীপ ঘাট থেকে নৌকা বা লঞ্চ করে যেতে হবে মায়াপুর ফেরিঘাট, দুটোরই ভাড়া ১০ টাকার মধ্যে। তারপর মায়াপুর ঘাট থেকে সোজা মন্দির পর্যন্ত টোটো ধরে নিন, ভাড়া ১০ টাকা।

    আর শিয়ালদহ থেকে যেতে হলে কৃষ্ণনগরগামী যে কোন ট্রেনে চলে যান কৃষ্ণনগর স্টেশন। সেখান থেকে টোটো ধরে নদীঘাট। তারপরে নৌকো করে মায়াপুর ঘাট, সেখান থেকে টোটো করে মন্দির।

 

ইসকন মন্দির ছাড়া আর কি কি দেখবেন ?

    এছাড়াও যদি ইচ্ছা থাকে, নবদ্বীপ ধাম অথবা বিষ্ণুপ্রিয়া স্টেশন থেকে টোটো ভাড়া করে ঘুরে নিতে পারেন নবদ্বীপের মন্দির গুলি |  মন্দিরটি যেহেতু অনেকটা এলাকাজুড়ে রয়েছে এবং হাওড়া বা শিয়ালদা থেকে মধ্যে পৌঁছাতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায় একদিনে ফেরার প্ল্যান থাকলে সকাল সকাল বেরোতে হবে। তবে আমি বলব বলে মন্দির প্রাঙ্গণে সন্ধ্যাবেলার আরতি  মিস করবেন না।

 

কোথায় থাকবেন?

    মায়াপুর মন্দিরের বাইরে ছোট-বড় অনেক গেস্ট হাউস এবং হোটেল আছে । এখানের একরাত্রির ভাড়া ২০০ টাকা থেকে শুরু । গেস্ট হাউস বা হোটেল ভাড়া করার জন্য আপনার কাছে পরিচয় পত্র থাকা অবশ্যক যেমন আধার কার্ড ভোটার কার্ড ইত্যাদি । 

এই সমস্ত হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে খাবার-দাবারের সুবন্দোবস্ত রয়েছে ।

 

Iskon-Hotel-Food

আরও পড়ুন –  কলকাতার কিছু বিখ্যাত মন্দির

 

 

ভালো লাগলে পোস্টটি সকলের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন । আপনাদের মতামত নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানান আমরা অপেক্ষায় আছি ।


মন্দিরটিকে আরো ভালো করে দেখতে নিচের ভিডিওটি দেখুন

Facebook Comments Box
BengaliEnglishHindi