১৯৮৪ সালে কলকাতার বুকে ভারতের মধ্যে সর্বপ্রথম মেট্রোরেল এর যাত্রা শুরু হয়। নর্থ-সাউথ করিডরে মাত্র ১৭ টি স্টেশন নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও পরবর্তী কালে আরও ৯টি স্টেশন যুক্ত হয়। সময়ের সাথে সাথে কলকাতার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে ওঠে কলকাতা মেট্রো। ২০০৮ সালে কলকাতা মেট্রো ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর নির্মাণের প্রস্তাব মঞ্জুর করা হয় । তারপর মেট্রো নির্মাণের কাজ শুরু হলেও নানান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারনে থমকে যাই এই নির্মাণকার্য । কিন্তু ২০২০ সালের ১৩ ই ফেব্রুয়ারি সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল শুরু হয়। এরপর ফুলবাগান মেট্রো স্টেশন উদ্বোধন করা হয় এবার তার পরবর্তী স্টেশন শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন যাত্রীদের জন্য একদম তৈরি।
শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন সমস্ত মেট্রো স্টেশনের মধ্যে ব্যস্ততম হতে চলেছে। শিয়ালদহ স্টেশন স্টেশন নিয়ে সমস্ত মানুষের উৎসাহ ও উৎকণ্ঠা আর তার সাথে সাথে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
কীভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মেট্রো স্টেশন?
শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করলেই বোঝা যাবে সৌন্দর্য ও কার্যকারীতা উভয় দিকেই নজর দেয়া হয়েছে। স্টেশনের দেওয়ালে রয়েছে বিভিন্নরকম কারুকার্য। মেট্রো স্টেশনের দু’ধরনের প্রবেশ এর ব্যবস্থা রয়েছে একটি সরাসরি শিয়ালদহ রেল স্টেশন এর সাথে যুক্ত আরেকটি মেন রাস্তার সাথে। যাত্রীরা সিঁড়ি আথবা চলমান সিঁড়ি দিয়ে সরাসরি স্টেশনে পৌঁছে যেতে পারবে । এছাড়া থাকবে লিফট এর বেবস্থ্যা।
যাত্রী সুরক্ষায় কথা মাথাই রেখে প্ল্যাটফর্মে থাকছে স্ক্রিন ড্রোর (Screen Door)। থাকছে সবচেয়ে বেশি টিকিট কাউন্টার। এখানে তৈরি হয়েছে ডবল ডিসচার্জ প্ল্যাটফর্ম। যেখানে থাকবে ২ টি স্টেশন আর ৪তি প্ল্যাটফরম । একদিকে থাকবে ১A এবং ১B প্ল্যাটফর্ম , অন্যদিকে ২A এবং ২B প্ল্যাটফর্ম যাতে যাত্রীরা মেট্রোর দু’দিকের দরজা দিয়েই ওঠা নামা করতে পারে। ফলে একদিকে ভিড় হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকবে। আর ভিড়ের সময় যে তাড়াহুড়ো হয় তাও আর হবে না। স্টেশনে রয়েছে ৯টি সিঁড়ি, ১৮টি এসক্যালেটর। যাতায়াতের সুবিধার জন্যে রয়েছে মোট ৫টি লিফট। রয়েছে ২৭টি টিকিট কাউন্টার। এছাড়াও প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের জন্য থাকছে বাথরুম এর বেবস্থ্যা।
মেট্রো কর্তাদের অনুমান, আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রতি ঘন্টায় শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনে প্রায় ১৭ থেকে ২২ হাজার লোক যাতায়াত করবেন। আর এই যাত্রীচাপের কথা মাথায় রেখেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন।
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে যে যাত্রীরা উঠবেন, তাঁদের অন্তত ১০ টাকার টিকিট কাটতেই হবে বলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য ভাড়ার যে স্ল্যাব নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই মতো ২ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত যেতে ৫ টাকার টিকিট কাটতে হবে যাত্রীদের। কিন্তু শিয়ালদহ থেকে ফুলবাগান স্টেশনের দূরত্ব ২.৩ কিলোমিটার হওয়ায় ভাড়ার পরের ধাপে চলে যাচ্ছেন যাত্রীরা। সেই ধাপ অনুযায়ী ২ থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব যেতে ১০ টাকার টিকিট কাটতে হবে তাঁদের। ভাড়ার পরের ধাপ, ৫ থেকে ১০ কিলোমিটারের জন্য ২০ টাকা এবং শেষ ধাপ, ১০ কিলোমিটার থেকে ১৬.৫ কিলোমিটারের জন্য ৩০ টাকা ভাড়া ধার্য করা হয়েছে।
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সল্টলেক সেক্টর-ফাইভের ভাড়া হবে ২০ টাকা। ১০ কিলোমিটারের ওই দূরত্ব পার করতে ট্রেনের খুব বেশি হলে ২০ মিনিট সময় লাগবে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ফেজ-টু অর্থাৎ হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত অংশে ট্রেন চালু হলে হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টর-ফাইভ অংশে যেতে ৩০ টাকার টিকিট কাটতে হবে যাত্রীদের।
ভালো লাগলে পোস্টটি সকলের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন | আপনাদের মতামত নিচে কমেন্ট করে অবশ্যই জানান আমরা অপেক্ষায় আছি |