হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি স্থায়ী hill station হল দার্জিলিং, যে জায়গাটিকে বলা হয় Queen of the hills অর্থাৎ পাহাড়ের রানী। এই দার্জিলিঙে আপনারা বরফে ঢাকা পাহাড়, সবুজ পরিবেশ থেকে শুরু করে ঝর্না, নদী, জলপ্রপাত, চোখ ধাঁধানো সূর্যোদয় নিজের চোখের সামনে উপলব্ধি করতে পারবেন। তবে দার্জিলিং শহরের আশেপাশে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যে জায়গাগুলো অনেক প্রকৃতিপ্রেমীর কাছে একেবারে অজানা।
কীভাবে দার্জিলিং পৌঁছবেনঃ
নিকটতম রেলস্টেশনঃ নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন (৬৮.৭ কিমি দূরে)
নিকটতম এয়ারপোর্টঃ বাগডগরা এয়ারপোর্ট (৯৫ কিমি)
এই এয়ারপোর্ট বা রেলস্টেশন থেকে নেমে আপনারা বেশ কিছু ভাড়া করা ট্যাক্সি বা ক্যাব পেয়ে যাবেন।
লামাহাট্টাঃ
দার্জিলিং এর কাছাকাছি একটি রোম্যান্টিক জায়গা হল লামাহাট্টা। ৬৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুন্দর শান্ত গ্রামটি বিভিন্ন পাইন গাছ দ্বারা বেষ্টিত। প্ররোচিত বাগান, অর্কিড গাছের সুন্দর ফুল, Buddhist Monastery এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার দারুন দৃশ্য এই জায়গাটির সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
দার্জিলিং শহর থেকে এই জায়গাটির দূরত্বঃ ২০ কিমি
মানভঞ্জনঃ
এই জায়গাটির সুন্দর অনন্য পরিবেশ সত্যিই মনমুগ্ধকর। এই জায়গার কাছাকাছি রয়েছে সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্কের প্রবেশ দ্বার, যেটি পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ জাতীয় উদ্যান। এই পার্কে আপনারা দেখতে পাবেন রেড পান্ডা, যে প্রাণীটি আমাদের দেশে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। এই পার্ক থেকে কিছু ট্রেকিং এর রাস্তা রয়েছে, যে রাস্তা দিয়ে সান্দাকফু পাহাড়ের দিকে যাওয়া যায়।
দার্জিলিং শহর থেকে এই জায়গাটির দূরত্বঃ ২৪.২ কিমি
এখানে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়ঃ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস
লেপচাজগৎঃ
এই জায়গাটি দার্জিলিং শহরের কাছাকাছি অবস্থিত আরো একটি লুকোনো রত্ন, যেখানে পর্যটকদের ভিড় তুলনামূলক কম। লেপচা উপজাতির মানুষ বসবাস করে বলে এই জায়গাটির নাম হয়েছে লেপচাজগৎ। এখান থেকেও আপনারা কাঞ্চনজঙ্ঘার অসাধারণ দৃশ্য দেখতে পাবেন। আপনারা যদি একটি মনোরম, শান্ত পরিবেশ এর সন্ধান করে থাকেন তাহলে এই জায়গাটি আপনাদের জন্য একদম উপযুক্ত।
দার্জিলিং শহর থেকে এই জায়গাটির দূরত্বঃ ১৩ কিলোমিটার।
টিঞ্চুলিঃ
টিঞ্চুলি দার্জিলিং জেলার একটি ছোট্ট সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম। ৫৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামটির তাকদা থেকে দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। আলপাইন গাছে ভরপুর এই জায়গাটিতে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর পাখির ডাক শুনতে পাওয়া যায়, যা গ্রামের পরিবেশকে আরও লোভনীয় করে তোলে।
দার্জিলিং শহর থেকে এই জায়গাটির দূরত্বঃ প্রায় ২৬ কিলোমিটার
এখানে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়ঃ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়।
চটকপুরঃ
প্রায় ৭৮৮৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত চটকপুর গ্রামটি সোনাদা জেলার এক পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের রাজকীয় সৌন্দর্য চোখের সামনে দেখলে আপনি সত্যিই মুগ্ধ হয়ে যাবেন। এখানে গেলে আপনারা ঘন জঙ্গলের পাশাপাশি বরফে ঢাকা পাহাড়ের এক অপরূপ দৃশ্য দেখতে পাবেন। আপনারা যদি সত্যি কারের প্রকৃতিপ্রেমী হন, তাহলে আপনার দার্জিলিংয়ের ভ্রমণের পথে এই জায়গাটিতে অবশ্যই list এ রাখুন।
দার্জিলিং শহর থেকেই এই জায়গাটির দূরত্বঃ প্রায় ২১ কিলোমিটার
এখানে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়ঃ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়
সুখিয়াপোখরিঃ
পূর্ব হিমালয়ের উঁচু উপত্যকার মাঝখান দিয়ে সুখিয়াপোখরি যাওয়ার যে রাস্তা সেটি অসম্ভব সুন্দর। আপনার যদি একবার এই রাস্তা দিয়ে যান, তাহলে এই road trip আপনারা কোনদিনও ভুলতে পারবেন না। চারপাশের আনন্দময়ী আবহাওয়াসম্পন্ন এই গোপন জায়গাটিতে একবারের জন্য অবশ্যই ঘুরে আসুন।
দার্জিলিং শহর থেকেই এই জায়গাটির দূরত্বঃ ১৭ কিমি
এখানে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়ঃ এপ্রিল থেকে মে মাস